বিয়ানীবাজার উপজেলায় গত জুলাই মাসে করোনা নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে, সেই সাথে বেড়েছে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। এই মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত পিসিআর ল্যাব টেস্টের ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের পাওয়া রিপোর্টে ২১০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। অন্যদিকে, ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে ১১জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আক্রান্ত ও প্রাণহানির দিক থেকে যা এ যাবতকালে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে, আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৮৮জন।

এর আগে গত বছরের ২৪ এপ্রিল বিয়ানীবাজারে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপর থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ উপজেলায় ৮৩৪ জনের শরীরের করোনা ভাইরাসের অস্বিত্ব শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে উপজেলায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল ওই বছরের মে মাসে। এরপর থেকে এই পর্যন্ত ৪৪জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ হ্রাসের যেন কোনো লক্ষণ নেই। করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যাও প্রতিদিনই বাড়ছে। শুধু পৌর এলাকায় নয়, বিভিন্ন ইউনিয়নেও করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। মহামারি পরিস্থিতিতে এখানকার মানুষের মধ্যে নেই ভীতি, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। সবার চলাফেরা ও দৈনন্দিন কাজ যেন এখনো ভাবলেশহীন। বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীর জন্য স্থাপিত দশটি আইসোলেশন শয্যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত খালি পড়ে ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে হাসপাতালের আইসোলেশন শয্যাগুলো প্রায় পূর্ণ রয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী জানান, সিলেটের দুটি পিসিআর ও  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ টেস্ট এবং করোনা শনাক্ত হয়েছেন। পিসিআর টেস্টের পাশাপাশি র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টও করা হচ্ছে।

তিনি জানান, করোনা টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সাথে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। টেস্ট ও শনাক্তে বয়স্কদের চেয়ে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। আগে উপসর্গ দেখা দিলেও অনেকের টেস্টে আগ্রহ থাকত না। এখন জ্বর সর্দিসহ উপসর্গ দেখা দিলে অনেকেই নিজ উদ্যোগে এসে করোনা পরীক্ষার নমুনা দেন।

করোনা ইউনিটের শয্যা বাড়ানোর বিষয়ে ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, আমাদের আইসোশেন ওয়ার্ডে দশটি শয্যা রয়েছে। আমরা নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অক্সিজেন সাপোর্টসহ সবগুলো শয্যার রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, সম্প্রতি ৭টি কনসেনট্রেটর পাওয়ায় করোনা রোগীদের সেবা প্রদানে সহযোগিতা হচ্ছে। আনুসাঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জাম আরো যুক্ত হলে শয্যা আরো বাড়ানোর কথা জানান তিনি। পাশাপাশি সংক্রমণের উর্ধ্বগতিতে সংকট নিরসনে করোনা ইউনিটে শয্যা সংখ্যা বাড়াতেও আমরা চেষ্টা করছি।